পই পই করে হিসাব রাখবেন সোলাইমান সুখন । poi poi ka hisab rakhte hobe

 


বর্তমানে সোস্যাল মিডিয়া ফেইজবুক ইউটিউব সহ সকল জায়গায় একটাই ডায়লক “ পই পই করে হিসাব রাখবেন ”  নিয়ে যত সব আলোচনা ও সমালোচনা। অসুন জেনে নেই কে এই সোলায়মান সুখন 

 

ভুমিকা-- বয়স ৩৫ এর কোঠা পার হলেও চলনে বলনে কথাবার্তায় এখনো তরুণ সোলায়মান সুখন। ফেসবুকে নানা ধরনের অনুপ্রেরণামূলক স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিওর পোষ্ট করার কারণে ইতিমধ্যেই তরুণদের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছেন তিনি।



আমাকে স্কুলে ভর্তি করলেও বইয়ের সংকট থাকায় মা নিজের হাতে এঁকে এঁকে তৈরি করেন প্রথম শ্রেণী শিক্ষার্থীর আমার বাংলা বই। মায়ের হাতে আঁকা বই নিয়ে স্কুলে গিয়ে বিপাকে পড়ে গেলাম। কারণ সহপাঠিরা ছাপার বই বাদ দিয়ে আমার মায়ের হাতে আঁকা বই নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলো।’ 

বয়স ৩৫ এর কোঠা পার হলেও চলনে বলনে কথাবার্তায় এখনো তরুণ সোলাইমান সুখন। ফেসবুকে নানা ধরনের অনুপ্রেরণামূলক স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিওর পোষ্ট করার কারণে ইতিমধ্যেই তরুণদের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছেন তিনি।

এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিয়ম মেনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস, ছবি ও ভিডিও পোষ্ট করি। আমার পোষ্টে লাইক দিলে আমি হয়তো বিখ্যাত করছে কিন্তু যারা লাইক দিচ্ছেন তারা যদি আমার লেখাগুলো বা আমি কী বোঝাতে চেয়েছি তা বুঝে নেন, নিয়মগুলো মেনে চলেন তাহলে তারাও নিজেদের জীবন পরিবর্তন করে উন্নতি করতে পারবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’

শুধুমাত্র ভার্চুয়াল জগতে নয়, সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ক্লাবগুলোর আমন্ত্রণে প্রেরণাদায়ী বক্তৃতা দিয়ে থাকেন সোলায়মান। নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে নিজের জীবনের প্রত্যক্ষ ঘটনাগুলো শেয়ার করেন তিনি। তরুণদের মাঝে অনুপ্রেরণা জোগান, তাদের এগিয়ে চলতে শক্ত ও সামর্থ্যবান হওয়ার প্রেরণা দিয়ে থাকেন সোলায়মান সুখন।

পরিবারঃ

পুরোনাম খন্দকার মোহাম্মদ সোলায়মান। ডাক নাম সুখন। ১৯৮০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি যশোর সেনানিবাসে জন্মগ্রহণ করেন সোলায়মান। সাবেক সেনা সদস্য বাবা আব্দুল ওয়াদুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা মা সামসুন নাহার খন্দকারের ৩ ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে তিনি মেঝো।

বড় বোন সোহেলী পারভীন গৃহিণী, সেঝো ভাই খন্দকার রায়হান ডাইমেনসন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহকারি ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। আরেক বোন খন্দকার চামেলী পারভীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বি-বারিয়া সরকারি কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। ছোট ভাই ওসমান ইমন বিজ্ঞাপন নির্মাতা। গ্রামীণফোনের সাবেক কর্মকর্তা স্ত্রী সায়রা বেগম ও স্ট্যান্ডার্ড ওয়ানে পড়ুয়া মেয়ে নাজলা ওয়াফাকে নিয়েই সোলায়মান সুখনের পরিবার। 

শিক্ষা জিবনঃ 

বাবার চাকরিসূত্রে কোথাও থিতু হতে পারেননি সোলায়মান। জালালাবাদ সেনা নিবাস উচ্চ বিদ্যালয়ে শুরু হয় তার শিক্ষা জীবন। ১৯৯৫ সালে মুসলিম মডার্ন একাডেমি থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ২০০০ সালে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি থেকে কমিশন প্রাপ্ত হন ও ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।



তিনি জানেন কীভাবে নিজের জীবনকে সুন্দর রাখতে হয়। ছবি: সংগৃহীত।

কর্মজীবনঃ

৮ম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতার স্ক্রিপ্ট লিখে জীবনে প্রথম ১০০ টাকা আয় করেছিলেন। নিজের পেশাগত কর্মজীবন নিয়ে তিনি বলেন, ‘২ বছর ট্রেনিং শেষ করে ২০০০ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সাব লেফটেন্যান্ট হিসেবে যোগ দেই। আমি একটু স্বাধীনচেতা মানসিকতার হওয়ায় মনে হতো সামরিক জীবন আমার জন্য প্রযোজ্য নয়। তাই ২০০২ সালে চাকরিটা আমি ছেড়ে দেই। এরপর আইবিএতে পড়াশোনার জন্য কর্মজীবনে কিছুটা বিরতি দিয়ে আবার শুরু করি। এরপর ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বাংলালিংক-এর মত প্রতিষ্ঠানে ব্র্যান্ড ম্যানেজার ও মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্মরত ছিলাম। বর্তমানে আমরা নেটওয়ার্কসের সাথে প্রধান বিপণন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছি। দেশব্যপী ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করে ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে  কাজ করে যাচ্ছি। এছারাও ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) নিয়ে কাজ করছি। যেখানে আমরা ভিডিও কনফারেন্সের ফুল সেটআপ, ভেহিক্যাল ট্র্যাকিং ইত্যাদি নিয়ে কাজ করছি।’

বর্তমান ব্যস্ততাঃ

বর্তমান ব্যস্ততা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘চাকরির পাশাপাশি বর্তমানে কিছু ভিডিও নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছি। যেখানে আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে যাচ্ছি, সেখানে কী দরকার? এই ডিজিটাল বাংলাদেশ হলে তরুণদের কী লাভ, তারা কীভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে আয় করবে, ফ্রিল্যান্সিং করবে, আউটসোর্সিং করবে এসব নিয়ে একদম সাধারণ মানুষের ভাষায় একটা ভিডিও লাইব্রেরি করতে চাই। যার মধ্যে ডাটা মানি, সার্ভার মেইনট্যানেন্স, ফ্রিল্যান্সিং, আইওটি, অ্যাপস ডেভেলপমেন্টের মত ২৫টি বিষয়ের উপর ভিডিও তৈরি করবো।’

প্রিয় তালিকা

সোলায়মান সুখনের প্রিয় বন্ধুর তালিকা অনেক বড়, তবে এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন সেনা কর্মকর্তা রাশিদ। প্রিয় ব্যক্তিত্ব হচ্ছেন রিচার্ড ব্রানসন, প্রিয় খাবার গরুর মাংস ভুনা, প্রিয় রঙ কালো এবং যেকোনো পাহাড়ি এলাকায় ঘুরতে পছন্দ করেন তিনি। 

অসামান্য মেধার অধিকারী এই মানুষটি তার চমৎকার বুদ্ধিদীপ্ততা, রসবোধ ও ভালোবাসা দিয়ে খুব সহজেই ঠাঁই করে নিয়েছেন অগণিত মানুষের পছন্দের ব্যক্তিত্বের তালিকায়।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url